বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩১
Proval Logo

অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে : আশাবাদ ড. জাহিদের

প্রকাশিত - ২৩ জানুয়ারি, ২০২৫   ১১:২৫ পিএম
webnews24

২৪ ঘন্টা অনলাইন : বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ এবং বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি তাদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত অর্থনৈতিক কার্যক্রমের এক-চতুর্থাংশও বাস্তবায়ন করতে পারে, তাহলে অর্থনীতি ‘ঘুরে দাঁড়াবে’।

তিনি বলেন, ‘আগামী বাজেট (২০২৫-২৬ অর্থবছর) শেষে আমরা নিশ্চিত হতে পারব যে অর্থনীতিকে দ্রুত বৃদ্ধি করার জন্য কী উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। যদি অল্প সময়ের মধ্যে পরিকল্পিত উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন যায়, তাহলে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে আশা করা যায়।’

তিনি আরও বলেন, সরকার ‘বাংলাদেশ ২.০’ শুরু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। অর্থনীতিকে সুসংগঠিত করতে ব্যবসায়িক নিয়ম-নীতি ও প্রক্রিয়া সহজ করা, বিদ্যুতের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করা এবং ব্যাংকিং খাতকে তার করুণ অবস্থা থেকে উদ্ধার করা দরকার। ড. জাহিদ আজ বাসসকে তার বাসভবনে এক সাক্ষাৎকারে এসব মন্তব্য করেন।

অর্থনীতির প্রধান বাধা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আর্থিক খাত, জ্বালানি খাত ও বিনিয়োগের পথে ব্যবসায়িক নিয়মকানুনের মতো বাধাগুলো অর্থনীতির জন্য বড় প্রতিবন্ধক।

এ প্রসঙ্গে তিনি ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো’র (এনএসডব্লিউ) অগ্রগতির প্রশংসা করেন, যা আমদানি ও রফতানি প্রক্রিয়ার জটিলতা মোকাবিলার মাধ্যমে ব্যবসার সময় ও খরচ সাশ্রয় করবে।

তিনি সরকারকে আমদানি-রফতানি কার্যক্রমে লাইসেন্স ও সার্টিফিকেশন ডিজিটাল প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন এবং এটি ম্যানুয়াল সিস্টেম থেকে রূপান্তর করার সময় সঠিকভাবে কার্যকর রাখার ওপর জোর দেন।

ড. জাহিদ বলেন, একক উইন্ডো কার্যকর না হওয়ার কারণ উদ্যোগের অভাব নয়, বরং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) দৃশ্যমান প্রতিরোধ। সেই চরিত্র একই রয়ে গেছে।

তিনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত এই প্রক্রিয়া পুরোপুরি ডিজিটাল ও বিশ্বাসযোগ্য না হবে, ততক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হবে। তবে এটি সঠিক দিকেই অগ্রসর হচ্ছে।’

বর্তমান অর্থবছরে (২০২৪-২৫) এনবিআরের রাজস্ব সংগ্রহের গতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অর্থনীতি বেশিরভাগ সময় স্থবির থাকায় প্রথম ত্রৈমাসিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) তেমন কোনো সুযোগ ছিল না।

তিনি বলেন, ‘রাজস্ব সংগ্রহ বাড়াতে এনবিআরে বিশেষ করে কর নীতি এবং প্রশাসনে সংস্কার প্রয়োজন।’

উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর মেয়াদে রাজস্ব সংগ্রহ ২.৬২ শতাংশ কমে ১,৩০,১৮৫ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। শুধু নভেম্বরেই রাজস্ব সংগ্রহ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৮.৯৫ শতাংশ কমে ২৫,৩৬০ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।

এছাড়াও, এনবিআর তাদের প্রথম পাঁচ মাসের লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৩৮,৮৩০ কোটি টাকা পিছিয়ে রয়েছে। চলতি অর্থবছরের জন্য রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪,৮০,০০০ কোটি টাকা।

ড. জাহিদ উল্লেখ করেন, দ্রুত রাজস্ব বাড়ানোর জন্য ১০০টিরও বেশি পণ্যের ওপর ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক বাড়ানোর সাম্প্রতিক পদক্ষেপটির ফল স্পষ্টত উল্টো হয়েছে।

তিনি বলেন, এই পদক্ষেপটি দৃশ্যত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল’কে (আইএমএফ) সন্তুষ্ট করার জন্য নেওয়া হয়েছিল, তবে এখন সরকার কিছু ক্ষেত্রে পিছু হটায় আইএমএফও হতাশ হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ মানুষের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে এবং এটি দূরদর্শী সিদ্ধান্ত ছিল না।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, সরকার এ সিদ্ধান্তটি তাড়াহুড়া করে এবং কোনো পরামর্শমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়া ছাড়াই বাজেট সংশোধনের মাধ্যমে কার্যকর করেছে।
২৪ঘন্টা/এআর

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন