বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১
Proval Logo

ভোটের অধিকারই জবাবদিহিতা তৈরি করতে পারে : তারেক রহমান

প্রকাশিত - ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫   ১১:০১ পিএম
webnews24

২৪ ঘন্টা অনলাইন : ভোটের অধিকারই জবাবদিহিতা তৈরি করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশে অনেক রাজনৈতিক দল আছে। সেগুলোর ভিন্ন মত ও আদর্শ রয়েছে। তবে একটি ব্যাপারে সবাইকে এক জায়গায় আসা উচিত, সেটি হলো-আইনকানুন ও সংবিধান মোতাবেক নির্দিষ্ট সময় পর ভোট হতে হবে। সেটি জাতীয় সংসদ, পৌরসভা কিংবা ইউনিয়ন পরিষদ হোক। মোটকথা ভোটের অধিকারই একমাত্র জবাবদিহিতা তৈরি করতে পারে। রাষ্ট্রে, সমাজের সব জায়গায় যদি জবাবদিহিতা তৈরি করতে পারি, তাহলে ধীরে ধীরে আমরা অগ্রসর হতে সক্ষম হব। সরকার যদি প্রতিটি কাজের জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকে, তাহলে মানুষের দুঃখ, দুর্দশা লাঘব করা সম্ভব হবে।’

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে রোববার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তারেক রহমান।

নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে থাকার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আজকে গত কয়েক মাস ধরে বলছি, সামনের নির্বাচন এত সহজ হবে না,  আপনারা যত সহজ ভাবছেন। নিজেরা যতই বড়াই করুন না কেন, আর বিএনপির শাখা-প্রশাখা যতই গ্রাম পর্যন্ত থাক, তারপরও জনগণ ম্যাটারস। জনগণই আমাদের শক্তি। তারা সঙ্গে না থাকলে কী হয়, ৫ আগস্ট তা বুঝিয়ে দিয়েছে। কাজেই আমরা যদি ভুল করি, জনগণ কিন্তু আবার একটা কিছু বুঝিয়ে দেবে। তখন কিন্তু পস্তাতে হবে, হা-হুতাশ করতে হবে।’

বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ১৭ বছরের নির্যাতন-নিপীড়ন, মামলা-কারাভোগের কথা তুলে ধরে তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা মোটামুটি একটা গড় হিসাবে জানি, বিএনপির ৬০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা-গায়েবি মামলা আছে। শুধু জুলাই-আগস্ট মাসের আন্দোলনে বিএনপির ৫শর মতো নেতাকর্মী শহিদ হয়েছেন। হাজারো নেতাকর্মী জখম হয়েছেন। আমরা এত অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছি মোটরসাইকেলবহরকারীদের সুবিধার জন্য নয়।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘মানুষ হিসাবে হয়তো আমরা বিভ্রান্ত হতেই পারি। কিন্তু যে পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে এই মুহূর্তে আজকে এসে দাঁড়িয়েছি, আমি বিনীতভাবে আপনাদের কাছে অনুরোধ করব, দয়া করে ওই মোটরসাইকেলওয়ালাদের ভিড় করতে দেবেন না। দয়া করে আপনারা (নেতাকর্মী) শহিদ জিয়াউর রহমানের জানাজার চিত্রটা মনে করবেন এবং বিভ্রান্তিকর কোনো কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন।’  

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘অনেকেই বলেন দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে বিএনপি সরকার গঠন করার সর্বোচ্চ সম্ভাবনা আছে। যদি মোটরসাইকেলবহরকারীদের জন্য বা আমাদের কিছু নেতাকর্মী বিভ্রান্ত হয়ে এমন কোনো পরিস্থিতির সৃষ্টি করে, সেখানে অন্য কেউ সরকার গঠন করলে কেউ ভালো থাকতে পারবেন না। কারও জন্য ভালো হবে না।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কোনো কারণে যদি অন্য কেউ সরকার গঠন করে, বাংলাদেশ কিংবা আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে হোক, সেটা দেশ ও জাতির জন্য ভালো হবে না। এখনো আমাদের হাতে সময় আছে, মানুষ যেভাবে চায় সেভাবে চলুন। দিন শেষে ভোটারদের কাছেই যেতে হবে।’  

তিনি বলেন, ‘ছোট-বড় কিছু রাজনৈতিক শক্তি তারা বিভিন্নভাবে আমাদের (বিএনপি) বিপক্ষে কথা বলার চেষ্টা করছে। তাই আমাদের সতর্ক ও সচেতন হতে হবে।’  

সভায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজ সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে। সংস্কার তো শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শুরু করেছিলেন। রাজনৈতিক সংস্কার ছিল তার সবচেয়ে বড় সংস্কার। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় শাসন ব্যবস্থায় নিয়ে এসেছিলেন তিনি। ওয়ান-পার্টি সিস্টেম থেকে মাল্টিপার্টি সিস্টেম নিয়ে এসেছিলেন। সবার কথা বলার অধিকার নিশ্চিত করেছিলেন। তার শাসনামলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ একটি সম্মানের আসনে পৌঁছাতে পেরেছিল। আমাদের দায়িত্ব হবে জিয়াউর রহমানের যে সততা সেই সততা সবাই যেন রক্ষা করি। শহিদ জিয়ার যে স্বপ্ন, তারেক রহমানের যে স্বপ্ন, তা বাস্তবায়ন করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রমুখ।

এ ছাড়া যুগান্তর সম্পাদক, বিশিষ্ট কবি ও সাহিত্যিক আবদুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ সভায় বক্তব্য দেন।
২৪ ঘন্টা/এআর

ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে সঙ্গে থাকুন
ওয়েব নিউজ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

আরও পড়ুন